টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি ২০২৬ - টাইগার মুরগির খাবার তালিকা ২০২৬

সফলতার চরম প্রতিযোগিতাময় সময়ে এসে কিছুদিন আগে পর্যন্ত আমরা ভাবতাম সরকারি জব বা চাকরি যেটাই বলি না কেন মানে সফলতা। ২০২৫ সালে এসে নিঃসন্দেহে সেই ধারণা পাল্টে গেছে আমাদের। টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে টাইগার মুরগি লালন পালন করে আজকাল অনেকেই জীবনের সফলতা অর্জন করছে।

বিশেষ করে টাইগার মুরগি লালন পালন করে অনেকেই সফলতার উচ্চ শিখরে খুব অল্প সময়ে পা দিয়েছে এমন প্রমাণ মিলে। আপনি যদি টাইগার মুরগি লালন পালন করে সফলতার স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে আপনাকে আগে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। চলুন আজ আপনার সাথে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত শেয়ার করা যাক।
পেজ সুচিপত্রঃ টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি - টাইগার মুরগির খাবার তালিকা

টাইগার মুরগি কি

টাইগার মুরগির বৈজ্ঞানিক নাম হলো সিপিএফ থ্রি (CPF-3) যার বাংলাতে টাইগার মুরগি নামকরণ করা হয়েছে। টাইগার মুরগি নামকরণের কারণ হলো অন্যান্য জাতের মুরগির তুলনায় এই মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। এই মুরগির ওজন অন্যান্য মুরগির ওজনের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে এবং অতি দ্রুত বাড়তে পারে।

এদের পালক ডোরাকাটা বাঘের লোমের মত কয়েক রকমের হয়ে থাকে। দেখতে নাদুস নুদুস হয়। আর চলা ফেরার প্রকৃতি দেখেই বোঝা যায় এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। বিশেষত এদের গঠন প্রকৃতি চলাফেরার ধরনের উপর ভিত্তি করেই টাইগার মুরগি নাম রাখা হয়। টাইগার মুরগি কি, দেখতে কেমন, কেন নাম করণ করা হলো আশা করি অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন।

টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি

বাংলাদেশের আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি খুব একটা কঠিন নয়, আবার যে খুব একটা সহজ তাও নয়। দেশি মুরগি, সোনালি মুরগি যে পদ্ধতিতে লালন পালন করা হয় ঠিক সেই পদ্ধতিতে লালন পালন করতে পারেন।

টাইগার মুরগির ব্রিডার ও প্যারেনস স্টোক নিয়ে কাজ করতে চাইলে এটা একটু কঠিন কাজ হবে যদি আপনি এ লাইনে নতুন হয়ে থাকেন। প্রথমে কম পরিমাণে ইনভেস্ট করে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে পরবর্তীতে বেশি পরিমাণে ইনভেস্ট করে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এটাই আপনার জন্য সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত হবে।

যদি আপনি মাংস করার উদ্দেশ্যে টাইগার মুরগি পালন করেন তাহলে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি এক রকম হবে, আবার যদি আপনি ব্রিডার ও প্যারেনস স্টোক নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে পদ্ধতি একটু আলাদা হবে। একটি প্রাপ্তবয়স্ক টাইগার মোরগ দিনে ১১৫ থেকে ১৩০ গ্রাম পর্যন্ত খাবার খেয়ে থাকে, অন্যদিকে টাইগার মুরগি দিনে ১১০ থেকে ১১৫ গ্রাম খাবার খেয়ে থাকে আপনি যদি টাইগার মুরগি পালনে প্রথম হয়ে থাকেন তাহলে ভেন্টিলেশনের বিষয়টা আপনাকে মাথায় রাখতে হবে।

যদি ব্রিডার করতে চান তাহলে আলো নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে আপনাকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে অর্থাৎ মুরগিকে দিনের কত সময় আলোতে রাখতে হবে এবং কত সময় অন্ধকারে রাখতে হবে তা জানা অতীব জরুরী, মুরগি ডিমে আসার আগ পর্যন্ত দিনে প্রায় ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা মুরগিকে অন্ধকারে রাখতে হবে।

অন্ধকারে থাকা অবস্থায় রেস্টিং এর সময় মুরগির ডিম পরিপুষ্ট ও পরিপূর্ণ হয়ে থাকে। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় শাক-সবজির তরুলতা রাখতে হবে এতে করে যেমন আপনার খরচ কমে আসবে অন্যদিকে বাড়তি পুষ্টি যোগ হবে।

রেস্টিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়, মুরগির বাচ্চা তৈরি করার ক্ষেত্রে। বাচ্চা তোলা মুরগির ডিমের দাম স্বাভাবিক ডিমের দামের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে। ২৫ থেকে ৩০ টাকা পিস পর্যন্ত হয়ে থাকে তাই মুরগিকে নির্দিষ্ট পরিমাণে অন্ধকারে রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

টাইগার মুরগি ডিম দিতে শুরু করলে একাধারে ২০০ থেকে ৩০০টা পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। টাইগার মুরগি বাচ্চার দাম ১০০ থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। উপরি উক্ত বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি সঠিকভাবে জানাটা অনেক জরুরী এই লাইনে আসার যদি ইচ্ছা পোষণ করে থাকে।

টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

টাইগার মুরগি লালন পালন করতে হলে টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা আপনাকে খুব ভালোভাবে শিখে নিতে হবে। মুরগির ১ দিন বয়স থেকে ২৫ দিন বয়স পর্যন্ত কিছু ভ্যাকসিন রয়েছে এই ভ্যাকসিন গুলো আপনার টাইগার মুরগির পালনের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে। ভ্যাকসিন ছাড়া টাইগার মুরগি পালন অসম্ভব বললে ভুল হবে না। নিচে টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা নিয়ে টোটাল আলোচনা করা যাক।
  • রানিক্ষেত ও ব্রংকাইটিস আইবি
  • গামবোরো আইবি ডি
  • রাণীক্ষেত ল্যাসোটা
  • এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা H5N1
  • ফাউল পক্স
  • রাণীক্ষেত এনডি
  • ফাউল কলেরা
  • বার্ড ফ্লু (H5N)
  • করাইজা সালমনেলা রানিক্ষেত ও ব্রংকাইটিস জি + এনডি + আইবি

টাইগার মুরগির খাবার তালিকা

সারাদেশে বিভিন্ন খামারে বিভিন্ন জাতের মুরগি লালন-পালন করে থাকে। সেই দৃষ্টিতে প্রত্যেক জাতের মুরগির খাবার তালিকা আলাদা আলাদা হয়। ঠিক সেই রকম টাইগার মুরগির খাবার তালিকা ও অন্য জাতের মুরগির খাবার তালিকা থেকে একটু আলাদা। চলুন টাইগার মুরগির খাবার তালিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

এখানে মুরগির কোন কোন কোম্পানির খাবার ফিড খাওয়ানো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে সেটা তুলে ধরা হবে। প্রথম দিন থেকে ৭ দিন বয়স পর্যন্ত কি পরিমান খাবার গ্রহণ করবে দৈনন্দিন তার একটা সুষম খাবার তালিকা তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে।
  • ব্রয়লার স্টার্টার ফিড
  • ব্রয়লার গ্রোয়ার ফিড
  • লেয়ার লেয়ার ওয়ান ফিড

ব্রয়লার স্টার্টার ফিড

এক দিন বয়সের শুরু থেকে ৩০ দিন বয়স পর্যন্ত টাইগার মুরগির বাচ্চার জন্য ব্রয়লার স্টার্টার ফিড আপনি আপনার টাইগার মুরগির বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন। ৩০ দিনের কম বয়সী টাইগার মুরগির বাচ্চার জন্য এই ফিড অনেক পুষ্টিকর সমৃদ্ধ।

এই ফিড খাওয়ানোর ফলে ১ মাস থেকে ৪০ দিনের মধ্যে মুরগির বাচ্চাটি এক কেজিতে পরিণত হতে পারে। যেখানে ১.৫ থেকে ২ কেজি হলেই মুরগি বিক্রি করার জন্য উপযুক্ত হয়ে যায়। এই ফিড খাওয়ালে অতি দ্রুত মুরগির বাচ্চা পরিপূর্ণ মুরগিতে যেমন হয় তেমন মুরগি পালনে খরচ অন্য ফিডার তুলনায় কম হয়। তাই টাইগার মুরগির খাবার তালিকা অনুযায়ী ব্রয়লার স্টার্টার ফিড খাওয়ানো যেতে পারে।

ব্রয়লার গ্রোয়ার ফিড

যখন আপনার টাইগার মুরগির বয়স ৩০ দিনের উপরে তখন ব্রয়লার গ্রোয়ার ফিড আপনার টাইগার মুরগির খাবার তালিকায় রাখতে হবে। আর একটা কথা খেয়াল রাখতে হবে খাবার কেনার সময় অবশ্যই আসল নকল বিচার-বিশ্লেষণ করে কিনতে হবে।

বাজারে একই নামে কমা খাবার অনেক সময় অসাধু ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে থাকে। এতে করে ভুল করেও যদি আপনি কমা খাবার কিনে ফেলেন আপনার মুরগির বাচ্চার গ্রোথ ঠিকমতো হবে না। আবার মুরগির বাচ্চা অসুস্থ হতে পারে তাই ব্রয়লার গ্রোয়ার ফিড কেনার সময় চেষ্টা করবেন সরাসরি ডিলারের কাছ থেকে কেনার।

লেয়ার লেয়ার ওয়ান ফিড

ঝিনুকের গোড়া হাড়ের গোঁড়া ভুট্টার গুঁড়া এরকম আরো পুষ্টিকর সমৃদ্ধ খাবারের সমন্বয়ে এই লেয়ার লেয়ার ওয়ান ফিড টি যখন আপনার টাইগার মুরগির বয়স ৬০ দিন পার হবে তখন প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখতে হবে।

এই ফিডটি যতদিন আপনার টাইগার মুরগি খামারে রাখবেন এবং ডিম দেওয়া অবস্থাতেও এই ফিড আপনার মুরগিকে খাওয়াতে পারেন। ডিম দেওয়া অবস্থায় মুরগির ক্যালসিয়াম মিনারেল এর ঘাটতি দেখা দেয়, এই ঝিনুকের গোড়া, হাড়ের গোড়া, পুষ্টিকর সমৃদ্ধ খাবারটি আপনার মুরগিকে প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখলে ক্যালসিয়াম ও মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করবে। প্রতিদিন টাইগার মুরগি বাচ্চা ১ম দিন থেকে ৭ম দিন বয়স পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করে তার টাইগার মুরগির খাবার তালিকা তুলে ধরা হলোঃ

১ম দিন থেকে ৭ম দিন বয়স পর্যন্ত খাবার তালিকা

বয়স খাবার গ্রাম
১ম দিন  ১৪ গ্রাম
২য় দিন ১৮ গ্রাম
৩য় দিন  ২২ গ্রাম
৪র্থ দিন  ২৫ গ্রাম
৫ম দিন  ২৮ গ্রাম
৬ষ্ঠ দিন ৩২ গ্রাম
৭ম দিন ৩৮ গ্রাম

টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা

টাইগার মুরগি পালন করতে গেলে সর্বপ্রথম টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা সম্পর্কে জ্ঞান রাখা উচিত। টাইগার মুরগির বয়স যখন একদিন থেকে যতদিন আপনার খামারে টাইগার মুরগী রাখবেন ততদিন পর্যন্ত নিয়মিত কিছু ঔষধ বয়স ভিত্তিক ও সময় ভিত্তিক খাওয়াতে হয়। এতে করে আগে থেকেই মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

এমনকি যদিও কোন মুরগি ছোটখাটো রোগে আক্রান্ত হয় নিয়মিত মেডিসিন খাওয়ানোর ফলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হয় না। চলুন নিচে টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা তুলে ধরা যাক প্রয়োজন হলে এই তালিকাটি আপনি আপনার খামারে চার্ট হিসেবে সংরক্ষণ করতে পারেন।

টাইগার মুরগির ঔষধের তালিকা

বয়স ঔষধের নাম
১ দিন লাইসোভিট এমক্সসিলিন
২ থেকে ৪ দিন কসমিক্স প্লাস
৬ থেকে ১০ দিন ওরাবিট
১৫ থেকে ১৮ দিন হেপটোভেট রেনসল এডি- ই
২০ থেকে ২৫ দিন এম্প্রোলিয়াম সিপ্রো
২৬ থেকে ২৯ দিন গ্লোকোলাইট ভিটালামিনো ফ্রোট
৩০ থেকে ৩৬ দিন কৃমি নাশক
৪০ থেকে ৫০ দিন প্রোবায়টিক, ভিটামিন, লিভার টনিক

টাইগার মুরগির ভিটামিনের তালিকা

আপনার ফার্মের টাইগার মুরগির সঠিক গ্রোথ, ডিম দেওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখতে নিয়মিত কিছু ভিটামিন খাওয়াতে হয়। চলুন টাইগার মুরগির ভিটামিনের তালিকা নিচে আলোচনা করা যাক। এই ভিটামিন গুলো একদিকে আপনার টাইগার মুরগির শরীর সুস্থ রাখবে, ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হতে সহযোগিতা করবে। নিচে ভিটামিনের নাম এবং ভিটামিনের খাওয়ানো পরিমাণ তুলে ধরা হলোঃ

ভিটামিনের নাম ব্যবহার বিধি প্রয়োগ মাত্রা

দিন ভিটামিনের নাম সময়
৭ দিনে ২ দিন সকালে এডি-৩ই
২ লিটার পানি তে ১ মিলি
 মিশে দিতে হবে
৭ দিনে ১ দিন বিকেলের ক্যালসিয়াম
খাবারে ১ লিটার পানি তে ১ মিলি

 মিশিয়ে দিতে হবে

৭ দিনে ১ দিন সকালে খাবারে জিংক
 ১ লিটার পানি তে ১ মিলি
 মিশে দিতে হবে
৭ দিনে ১ দিন সকালে খাবারে লিভার টনিক
 ৩ লিটার পানি তে ১ মিলি
 মিশে দিতে হবে
৭ দিন পরপর টানা দুই দিন দিতে ই-সেল  ২ লিটার পানি তে ১ মিলি

টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন পদ্ধতি

টাইগার মু্রগি লালন পালন করতে যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই টাইগার মু্রগির ভ্যাকসিন পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। অন্যথায় ভ্যাকসিন প্রয়োগে কমবেশি বা ভুল হলে টাইগার মুরগি অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। এমন কি মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আসুন টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। নিচে ভ্যাকসিন প্রয়োগ চার্ট তুলে ধরা হলোঃ

টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন প্রয়োগ চার্ট

দিন ভ্যাকসিন প্রয়োগ
১-৩ দিন বয়সে রানিক্ষেত ও ব্রংকাইটিস আইবি +এনডি
চোখে এক ফোটা করে দিতে হবে
১১-১২ দিন বয়সে গামবোরো আইবি ডি
চোখে এক ফোটা করে দিতে হবে
১৭-১৮ দিন বয়সে গামবোরো আইবি ডি
 খাবার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে
১৯ -২৩ দিন বয়সে লিভার টনিক
 ৩ লিটার পানি তে ১ মিলি
 মিশে দিতে হবে
২৪-২৮ দিন বয়সে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা H5N1 চামড়ায় ইঞ্জেকশন দিতে হবে
৩০-৩৫ দিন বয়সে ফাউল পক্স ফাউল পক্স ডানায় ইঞ্জেকশন দিতে হবে
৬ -৭ সপ্তাহ বয়সে রাণীক্ষেত এনডি ঘাড়ে চামড়ার নিচে ইঞ্জেকশন দিবে
৮ সপ্তাহ বয়সে ফাউল কলেরা 
ডক্টরের পরামর্শ মত
১৫-১৬ সপ্তাহ বয়সে বার্ড ফ্লু ( H5N )  চামড়ায় ইঞ্জেকশন দিতে হবে
১৬ সপ্তাহ বয়সে করাইজা সালমনেলা রানিক্ষেত ও ব্রংকাইটিস জি+এনডি+আইবি  ডক্টরের পরামর্শ মত

টাইগার মুরগির ঔষধের প্রয়োগ বিধি

টাইগার মুরগি লালন-পালন করতে গিয়ে অনেক সময় আবহাওয়ার কমবেশির কারণে মুরগি হালকা বা মাঝারি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার জন্য কিছু ঔষধ খাওয়াতে হয় কিন্তু অনেকেই ওষুধ ঠিকমতো কিনতে পারলেও পরিমান মত খাওয়াতে না পারার জন্য মুরগির অসুস্থতা ভালো না। তাই পরিমিত পরিমানের ঔষধ খাওয়ানোর পরিমাণ আমরা যারা টাইগার মুরগি পালন করি তাদের জন্য জানাটা অনেক জরুরী। টাইগার মুরগির ঔষধের প্রয়োগ বিধি নিচে টেবিল আকারে তুলে ধরা হলো

ঔষধ খাওয়ানোর পরিমাণ

ঔষধের নাম বয়স পরিমান
লাইসোভিট এমক্সসিলিন ১ম দিন
২ লিটার পানিতে ২ গ্রাম দিনে ৩ বার খাওয়াতে হবে
কসমিক্স প্লাস ২ -৪ দিন
২ লিটার পানিতে ২গ্রাম দিনে ৩ বার খাওয়াতে হবে
ওরাবিট ৭-১০ দিন
৬ লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিসাটে হবে
হেপটোভেট রেনসল এডি- ই ১২-১৪ দিন
 ২ লিটার পানিতে ২ গ্রাম দিনে ৩ বার খাওয়াতে হবে
এম্প্রোলিয়াম সিপ্রো ২০-২৪ দিন ২ লিটার পানিতে ২ গ্রাম দিনে ৩ বার খাওয়াতে হবে
গ্লোকোলাইট ভিটালামিনো ফ্রোট ২৬-২৮ দিন ২ লিটার পানিতে ২ গ্রাম দিনে ৩ বার খাওয়াতে হবে
কৃমি নাশক ৩০-৩৫ দিনে ২ লিটার পানিতে ২ গ্রাম দিনে ৩ বার খাওয়াতে হবে
প্রোবায়টিক, ভিটামিন, লিভার টনিক ৪০-৫০ দিনে
২ লিটার পানিতে ২ গ্রাম দিনে ৩ বার খাওয়াতে হবে

টাইগার মুরগী নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন (FAQ):

১. প্রশ্নঃ টাইগার মুরগি কত দিনে কত কেজি হয়?
উত্তরঃ টাইগার মুরগি ৩০ থেকে ৪০ দিন বয়সে এক কেজিতে রূপান্তর হয়।
২. প্রশ্নঃ প্রাকৃতিকভাবে মুরগি কতবার ডিম পাড়ে?
উত্তরঃ প্রাকৃতিকভাবে মুরগি ২৪ ঘন্টায় একবার ডিম পাড়ে।
৩. প্রশ্নঃ বাড়ির উঠোনে মুরগি কতদিন বাঁচে?
উত্তরঃ বাড়ির উঠোনে মুরগি চার থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
৪. প্রশ্নঃ টাইগার মুরগির খাবারের দাম কত?
উত্তরঃ খাবারের ব্র্যান্ড ও স্থানীয় বাজারের উপর নির্ভরশীল।
৫. উত্তরঃ মাঝারি টাইগার মুরগির ওজন কত?
উত্তরঃ মাঝারি টাইগার মুরগির ওজন ২-২.৫ কেজি এবং মোরগের ওজন ২.৫-৩ কেজি হয়।
৬. প্রশ্নঃ দেশি মুরগির বাচ্চার দাম কত?
উত্তরঃ দেশি মুরগির বাচ্চার দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
৭. প্রশ্নঃ মুরগি প্রথম ডিম পাড়ে কতবার ?
উত্তরঃ মুরগি প্রথম ডিম পাড়ে সাধারণত ১৮ থেকে ২০ সপ্তাহ।
৮. প্রশ্নঃ মুরগির ডিম পাড়া কি ক্ষতিকর?
উত্তরঃ মাংস উৎপাদন মুরগির ক্ষেত্রে ডিম দিলে মুরগির ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়।
৯. প্রশ্নঃ মুরগি কি দিনে একটা ডিম পাড়ে?
উত্তরঃ মুরগির প্রতি ২৪ ঘন্টায় একট ডিম পাড়ে।

লেখকের শেষ কথাঃ

আপনি যদি প্রথম টাইগার মুরগি লালন-পালন করার উদ্যোগ নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য টাইগার মুরগি লালন পালন করার সিদ্ধান্ত সর্বোত্তম হবে। টাইগার মুরগি আপনি যদি ডিম উৎপাদনের জন্য লালন পালনের সিদ্ধান্ত নেন লাভজনক হবে। মাংশ উৎপাদনের জন্য টাইগার মুরগি লালন পালন ও লাভজনক হবে।

টাইগার মুরগি লালন পালন করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে টাইগার মুরগির পালন পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। প্রয়োজন হলে প্রতিষ্ঠিত কোন ফার্মের মালিকের সঙ্গে থেকে পালন পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। সরকারি ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সেখান থেকে আপনি প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Present_Tech_BD এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url